ঢাকা , রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ , ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
মতিহারে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও দীর্ঘায়ু কামনায় দোয়া মাহফিল চারঘাটে আমবাগান থেকে ভারতীয় ফেনসিডিল জব্দ রাণীনগরে দুই ধান ব্যবসায়ীর ১০ লাখ টাকা ও কৃষকের তিনটি গরু চুরি নওগাঁ এসপির নেতৃত্বে বিশেষ অভিযানে ৭০ কেজি গাঁজাসহ দুই মাদক কারবারি আটক তানোরে শিশু সাজিদের পরিবারকে জামায়াতের আর্থিক সহায়তা বাড়ির উঠানে মাটি ভরাটকে কেন্দ্র করে মারপিট ও অগ্নিসংযোগ অভিযোগ পবার পর নিয়ামতপুরে ৬ শতাধিক গাছ কেটেছে দুর্বৃত্তরা পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েতে টাকার বিনিময়ে চাকরি, দালালি সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত, জেলা তথ্য অফিস রাজশাহীতে কিশোর-কিশোরী ক্লাবের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে মতবিনিময় করলেন, উপদেষ্টা পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে প্রয়োজন সততা, সৃজনশীলতা এবং দৃঢ় চরিত্র- সমাজকল্যাণ বিষয়ক উপদেষ্টা খেয়াঘাটে বিজিবির অভিযানে ভারতীয় কীটনাশক জব্দ মতিহারে মাদকাসক্ত ছেলেকে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন পিতা রাবিতে চারুকলায় শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগে মানববন্ধন ও কুশপুত্তলিকা দাহ লোকসানের ঝুঁকিতেও দুর্গাপুরে আলু চাষ দেশপ্রেম, পেশাদারিত্ব, নিষ্ঠা, সততা ও জনগণের আস্থা অর্জনের আহ্বান জানালেন-পুলিশ সুপার নিয়ামতপুরে ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা ঈশ্বরদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই যুবক নিহত কোরআনে বর্ণিত হজরত ঈসা (আ.)-এর ৭ মুজিজা গাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে এক দিনে ৯৪ জনের দেহাবশেষ উদ্ধার

তানোরে ডিএপি সারের ‘কৃত্রিম সংকটে’ খরচ বাড়ছে কৃষকের

  • আপলোড সময় : ০৩-১০-২০২৫ ০৬:১০:৫৫ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৩-১০-২০২৫ ০৬:১০:৫৫ অপরাহ্ন
তানোরে ডিএপি সারের ‘কৃত্রিম সংকটে’ খরচ বাড়ছে কৃষকের তানোরে ডিএপি সারের ‘কৃত্রিম সংকটে’ খরচ বাড়ছে কৃষকের
রাজশাহীর তানোরে সরকার নির্ধারিত পরিবেশকের (ডিলার) মিলছে না সার, ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সারের কৃত্রিম সংকটে খরচ বাড়ছে কৃষকের। তবে ডিলারদের ঘরে সার না থাকলেও খোলাবাজারে বেশী দাম দিলেই সার মিলছে। চাষিদের ডিএপি সার ব্যবহারের জন্য উৎসাহিত করছে কৃষি বিভাগ। কিন্তু তানোরে সরকার নির্ধারিত পরিবেশকদের (ডিলার) কাছে গিয়ে প্রয়োজন অনুযায়ী সারটি পাচ্ছেন না কৃষকেরা। যদিও কৃষি বিভাগ বলছে, ডিএপির পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। কৃষকদের অভিযোগ, চাহিদা বাড়ায় এই সারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়েছে। ফলে বাজার থেকে বেশি দামে তাঁদের কিনতে হচ্ছে।

মাঠপর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,  বিভিন্ন এলাকার খুচরা দোকানে ‘বাংলা ডিএপি’ সার ৫০ কেজির প্রতি বস্তা ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেসরকারিভাবে আমদানি করা ‘ডিকে ব্রান্ডের’ ডিএপি ১ হাজার ৭০০ টাকা এবং বিএডিসির সার ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৩৫০ টাকা বস্তা হিসাবে চাষিরা কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। অথচ যেকোনো ধরনের ডিএপি সারের নির্ধারিত মূল্য ১ হাজার ৫০ টাকা বস্তা। কৃষকেরা বলেন, তদারকির অভাবে এই সার চলে যাচ্ছে খুচরা বিক্রেতা ও কীটনাশক বিক্রির দোকানে। সেখান থেকেই চাষিদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। পরিবেশকদের কাছে সার থাকলেও প্রান্তিক চাষিদের কাছে তা বিক্রি করা হচ্ছে না। ‘সরবরাহ শেষ’ দাবি করে আগামী মাসে যোগাযোগ করতে বলছেন পরিবেশকেরা।

জানা গেছে, রাজশাহী জেলার জন্য সেপ্টেম্বর মাসের ডিএপি সারের চাহিদা ছিল ২ হাজার ৫২১ মেট্রিক টন। গত ১৮ আগস্ট সমপরিমাণ সার বরাদ্দ করা হয়েছে। একই সঙ্গে সরকার নির্ধারিত মূল্যে কৃষক পর্যায়ে বিতরণ নিশ্চিত করার জন্য বলা হয়েছে।উপজেলার বাধাইড় ইউনিয়নের (ইউপি) বিসিআইসি সার ডিলার মেসার্স নাবিলা ট্রেডার্স-এর স্বত্বাধিকারী সেলিম।কিন্ত্ত ব্যবসা দেখভাল করেন বাবু। বাবু বলেন,গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রায় সাড়ে ২৫ মেট্রিক টন ডিএপি সার বরাদ্দ হয়েছে। সার উত্তোলন ও গুদামে মজুদ করা আছে।এখন ধানে ডিএপি সারের প্রয়োজন নাই,তাই কৃষি কর্মকর্তা এখন ডিএপি সার বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। তবে যারা আসছে তাদের কিছু কিছু করে সার দেয়া হচ্ছে।স্থানীযরা জানান,সেলিম মান্দা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউপির বাসিন্দা। সাবাইহাটেও তার সারের দোকান রয়েছে,তানোরের বরাদ্দের সার কৌশলে সেখানেও বিক্রি করেন। তিনি অর্থের বিনিময়ে  বাধাইড় ইউপির নাগরিকত্ব সনদ নিয়ে ডিলারসীপ নিয়েছেন বলে কৃষকেরা অভিযোগ তুলে বলেন, সরেজমিন অনুসন্ধান করা হলে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে।

উপজেলার কলমা ইউনিয়নের (ইউপি)বিএডিসির পরিবেশক সুলতান আহমেদ। তাঁর দোকান দেখাশোনা করেন ছেলে সাখাওয়াত হোসেন। গত ২৩ সেপ্টেম্বর বিকেলে একজন কৃষক ডিএপি সারের জন্য যোগাযোগ করলে সাখাওয়াত হোসেন তাঁকে বলেছেন, এখন ইউরিয়া ছাড়া আর কোনো সার নেই।

খুচরা দোকানে ‘বাংলা ডিএপি’ সার ৫০ কেজির প্রতি বস্তা ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেসরকারিভাবে আমদানি করা ‘ডিকে ব্রান্ডের’ ডিএপি ১ হাজার ৭০০ টাকা এবং বিএডিসির সার ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৩৫০ টাকা বস্তা হিসাবে চাষিরা কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।

এদিকে সংকটের খবর শুনে সন্ধ্যার পরে কলমা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সাখাওয়াত হোসেনের দোকান বন্ধ। ফোন করা হলে বাড়ি থেকে আসেন। ডিএপি সার আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাঁর দোকানে সব ধরনের সারই আছে। দেখতে চাইলে তিনি গুদাম খোলেন। ভেতরে ডিএপি সার পাওয়া যায়। সাখাওয়াত জানান, সেপ্টেম্বর মাসের জন্য তিনি মোট ২৬ মেট্রিক টন ডিএপি সার বরাদ্দ পেয়েছিলেন, যার সাড়ে ১২ মেট্রিক টন এখনো মজুত রয়েছে।
গত বুধবার সকালে ওই ডিলারের কাছে ডিএপি সার নিতে যান চন্দনকোঠা গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলাম। প্রতিবেদকের সঙ্গে পরিচিত এই কৃষক বলেন, সাখাওয়াত হোসেন তাঁকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ইউরিয়া ছাড়া আর কোনো সার নেই।

এরপর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আসলে ওই সব কৃষকের এখন ডিএপি সারের প্রয়োজন নেই। ওরা এখন সার নিয়ে গিয়ে মজুত করবে। এ জন্যই ওদের সার দেওয়া হয় নাই। আগামী মাসে যখন তারা আলু চাষ করবে, তখন তাদের দেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক উম্মে সালমা বুধবার বিকেলে বলেন, কোথাও বেশি দামে সার বিক্রি করার সুযোগ নেই। তাঁদের সব ধরনের সার পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, কোথাও কেউ সার না পেলে বা বেশি দাম চাইলে তাঁরা সরাসরি কৃষি অফিসে অভিযোগ করবেন, তা না করে কেন সাংবাদিকের কাছে যাচ্ছেন ? এটা কি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ?

এদিকে পরিবেশকের কাছে গিয়ে সার না পাওয়ার অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে তানোরের শংকরপুর গ্রামের কৃষক বাবলু মুঠোফোনে বলেন, তাঁর কিছু নিচু জমিতে ধান হয়েছে।কিন্ত্ত সার না পাওয়ায় ধানের জমিতে সার প্রয়োগ করতে পারেননি।

এদিকে বিভিন্ন এলাকায় পরিবেশকের দোকানের দেয়ালে ডিএপি সারের ছবিসহ কৃষি বিভাগের একটি লিফলেট লাগানো দেখা যায়। সেখানে ব্যাখা করে বলা হয়েছে, ১ বস্তা ডিএপি সার ব্যবহার করলে ১ বস্তা টিএসপি সারের সমপরিমাণ ফসফেট এবং অতিরিক্ত ২০ কেজি ইউরিয়া সারের গুণাগুণ পাওয়া যায়। অর্থাৎ একজন কৃষকের জমিতে যদি ৩০ কেজি ইউরিয়া এবং ৫০ কেজি ফসফেট সারের প্রয়োজন হয়, সেখানে এক বস্তা ডিএপি ব্যবহার করলে ফসফেটের চাহিদা পূরণ হয়ে যায় এবং ইউরিয়ার ঘাটতি থাকে মাত্র ১০ কেজি।

এ ব্যপারে তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহমেদের মুঠোফোন একাধিকবাবর কল করা হলেও তিনি কল গ্রহণ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Admin News

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
পবার পর নিয়ামতপুরে ৬ শতাধিক গাছ কেটেছে দুর্বৃত্তরা

পবার পর নিয়ামতপুরে ৬ শতাধিক গাছ কেটেছে দুর্বৃত্তরা